ঢাকা , শনিবার, ২৪ মে ২০২৫ , ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চীনে মাত্র ৫ ডলারে তৈরি, যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি ১০০ ডলারে! নামী ব্র্যান্ডের ‘লভ্যাংশ বাণিজ্য’ নিয়ে তোলপাড়।

স্টাফ রিপোর্টার | উম্মাহ২৪.নিউজ
আপলোড সময় : ০৪-০৫-২০২৫ ০১:১০:০১ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ০৪-০৫-২০২৫ ০১:১০:০১ অপরাহ্ন
চীনে মাত্র ৫ ডলারে তৈরি, যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি ১০০ ডলারে! নামী ব্র্যান্ডের ‘লভ্যাংশ বাণিজ্য’ নিয়ে তোলপাড়।

বিশ্ববাজারে মার্কিন ব্র্যান্ডের উচ্চমূল্যের পণ্যের পেছনে লুকানো ‘সস্তা উৎপাদনের’ বাস্তবতা ফের সামনে এলো। সম্প্রতি চীনের একাধিক শিল্পপ্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ নথি ফাঁস হওয়ার পর জানা গেছে, নামকরা মার্কিন ও ইউরোপীয় ব্র্যান্ডগুলো মাত্র ৫ থেকে ১০ ডলারে চীনে পণ্য তৈরি করিয়ে, তা ১০ গুণ বা তারও বেশি দামে বিশ্ববাজারে বিক্রি করছে।

এই তথ্য প্রকাশ করেছে বেইজিংভিত্তিক অর্থনৈতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল সাপ্লাই ইনসাইটস। তাদের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, প্রযুক্তিপণ্য, পোশাক, ঘরোয়া সরঞ্জামসহ নানা ভোক্তাপণ্যের উৎপাদনমূল্য অত্যন্ত কম হলেও, ব্র্যান্ডগুলো মূলত বিপণন, ব্র্যান্ডিং, ডিজাইন, গ্রাহকসেবা ও পরিবহন খরচ দেখিয়ে তার মূল্য বহুগুণ বাড়িয়ে তুলছে।

বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই ব্যবস্থায় লাভের অধিকাংশই থেকে যাচ্ছে বড় ব্র্যান্ডের হাতে, আর উৎপাদনকারীরা থেকে যাচ্ছেন প্রান্তিক ও নিপীড়িত অবস্থানে। নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিশ্লেষক ড. লুসি হ্যান্ডারসন বলেন, “এই ঘটনা বৈশ্বিক পুঁজির বৈষম্যমূলক ব্যবস্থার বাস্তব চিত্র। ভোক্তা সচেতনতা বাড়ানো না গেলে এই চক্র ভাঙা সম্ভব নয়।”

চীনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ওয়েইবো-তে এই খবর ঘিরে চলছে প্রবল আলোচনা। অনেকেই বলছেন, তারা এতদিন অজান্তেই শুধু ব্র্যান্ড নামের জন্য পণ্যের প্রকৃত মূল্য থেকে ৫ থেকে ১৫ গুণ বেশি দিচ্ছিলেন। কেউ কেউ এই ব্যবস্থাকে সরাসরি “ভোক্তা শোষণ” বলে মন্তব্য করেছেন।

এদিকে মার্কিন কোম্পানিগুলোর পক্ষ থেকে বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলা হয়েছে, “আমরা কেবল পণ্য বিক্রি করি না—আমরা অভিজ্ঞতা, গুণমান, উদ্ভাবন ও ব্র্যান্ড ভ্যালু সরবরাহ করি। সেই কারণেই আমাদের খরচ ও মূল্য কিছুটা বেশি হয়।”

তবে ভোক্তাদের অনেকেই এ যুক্তিতে সন্তুষ্ট নন। তারা বলছেন, একই মানের পণ্য যদি চীনে তৈরি হয় এবং অন্য কোম্পানি আরও সাশ্রয়ী দামে বিক্রি করে, তাহলে শুধু ব্র্যান্ড নামের জন্য অতিরিক্ত টাকা নেওয়া অনৈতিক।

বাণিজ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরণের ফাঁস হওয়া তথ্য সরবরাহ শৃঙ্খলে স্বচ্ছতা আনার দাবি জোরদার করবে। পাশাপাশি, ভোক্তারা যদি ‘মেড ইন’ ট্যাগ ও উৎপাদন ব্যয় সম্পর্কে আরও সচেতন হন, তবে ভবিষ্যতে ব্র্যান্ডগুলোকেও ন্যায্য মূল্যে পণ্য সরবরাহে বাধ্য করা যাবে।


নিউজটি আপডেট করেছেন : NewsUPload

কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ