ঢাকা , শনিবার, ২৪ মে ২০২৫ , ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চট্টগ্রামে আইনজীবী আলিফ হত্যা মামলায় চিন্ময় দাসকে গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার | উম্মাহ২৪.নিউজ
আপলোড সময় : ০৫-০৫-২০২৫ ০৩:২২:৩৬ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ০৫-০৫-২০২৫ ০৩:২২:৩৬ অপরাহ্ন
চট্টগ্রামে আইনজীবী আলিফ হত্যা মামলায় চিন্ময় দাসকে গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ "রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় কারাবন্দি চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে ভার্চুয়াল শুনানিতে গ্রেপ্তার দেখাতে আদালতের নির্দেশ"

চট্টগ্রামের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যা মামলায় নতুন মোড় এসেছে। এ মামলায় এবার ইসকনের সাবেক নেতা ও সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার দেখানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (৫ মে) দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম এস এম আলাউদ্দিন ভার্চুয়াল শুনানির মাধ্যমে এই আদেশ দেন।

চিন্ময় দাস বর্তমানে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় কারাবন্দি আছেন। গত বছরের ২৫ নভেম্বর ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রামে হাজির করা হলে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠায়।তবে চিন্ময় দাসকে আদালতে হাজির করার দিন চট্টগ্রাম আদালত চত্বরে ঘটে নজিরবিহীন সহিংসতা।

তার অনুসারীরা আদালত প্রাঙ্গণে ভাঙচুর ও হামলার মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি চরমভাবে অবনতির দিকে নিয়ে যায়। ঘটনার সময় প্রায় তিন ঘণ্টা প্রিজন ভ্যান অবরোধ করে রাখে তারা। পুলিশ ও বিজিবিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করতে হয়।

এই সহিংসতায় গুরুতর আহত হন চট্টগ্রাম বারের তরুণ আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ। পরে চট্টগ্রাম মেডিকেলে নেওয়ার পর তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে আইনজীবী সমাজসহ সারা দেশে নিন্দার ঝড় ওঠে। এ ঘটনায় আলিফের বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন, যাতে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। পাশাপাশি আলিফের ভাই আরও একটি মামলা করেন, যেখানে ১১৬ জনকে আসামি করা হয়।

এছাড়া আদালত প্রাঙ্গণে হামলা, পুলিশের কাজে বাধা, ককটেল বিস্ফোরণ ও জনজীবনে ভীতি ছড়ানোর অভিযোগে আরও ৫টি মামলা রুজু হয়। সবগুলো মামলার তদন্ত এখনো চলমান রয়েছে।

চিন্ময় দাস রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় হাইকোর্ট থেকে ৩০ এপ্রিল জামিন পেলেও, তার মুক্তি এখন অনিশ্চিত। কারণ সরকারপক্ষ জামিনের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার জজ আদালতে আবেদন করেছে, যা শুনানির অপেক্ষায় আছে। নতুন করে আলিফ হত্যা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর পর পুলিশ চাইলে তাকে আবারও রিমান্ডে নিতে পারবে।

আইনজীবীদের অনেকেই এই সিদ্ধান্তকে মামলার জন্য "টাইমলি ব্রেকথ্রু" বলে উল্লেখ করেছেন। চট্টগ্রাম বারের সভাপতি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম বলেন, “আমরা প্রথম থেকেই বলেছি, আলিফ হত্যার পেছনে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র রয়েছে। চিন্ময় দাস মূল কুশীলব কিনা তা তদন্তেই প্রমাণিত হবে, তবে তাকে এই মামলায় অন্তর্ভুক্ত করাটা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।”

অন্যদিকে, চিন্ময় দাসের পক্ষের আইনজীবীরা দাবি করেছেন, তিনি নির্দোষ এবং তার নাম ষড়যন্ত্র করে মামলায় জড়ানো হয়েছে। তবে তারা এখনো মামলার ডকুমেন্ট সংগ্রহে ব্যস্ত এবং আইনি পরামর্শ নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি বিশেষ টিম ইতোমধ্যে মামলার তদন্তে নতুন করে মাঠে নেমেছে। জানা গেছে, তারা চিন্ময় দাসের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া বক্তব্য, তার অনুসারীদের যোগাযোগ ও ফান্ডিং নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে।

সরকার বলছে, এই মামলার বিচারে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে যাতে আদালত চত্বরে এমন অরাজকতা আর না ঘটে। তদন্ত সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য পুলিশ সদর দফতর থেকেও তদারকি বাড়ানো হয়েছে।


নিউজটি আপডেট করেছেন : NewsUPload

কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ