
গত বছরের রাজনৈতিক সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ হয়ে কোমায় চলে যাওয়া শিশু বাসিত খান মুসা, নয় মাসের দীর্ঘ চিকিৎসা শেষে অবশেষে মুখ ফুটে বলল “মা”। শিশুটির মা নিশামনি বলছেন, “ও যখন প্রথম বলল, আমার কান যেন বিশ্বাসই করতে চায়নি। ওই ডাকটা আমার কাছে একটা অলৌকিক মুহূর্ত ছিল।”
মায়ের মুখে ফিরে পাওয়া ছেলের এ ডাক ছিল ১ মে সকাল বেলায়, ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ফিজিওথেরাপি চলাকালে।
গত বছরের জুলাই মাসের মাঝামাঝি রাজধানীর মেরাদিয়ায় এক সংঘর্ষে সাত বছর বয়সী মুসা ও তার দাদি গুলিবিদ্ধ হন। মুসার দাদি ঘটনাস্থলে মারা গেলেও মুসাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসকদের মতে, মুসার মস্তিষ্কে গুলির আঘাত ছিল ‘মারাত্মক’ পর্যায়ের।
দীর্ঘ সময় কোমায় থাকার পর, ধীরে ধীরে সাড়া দিতে শুরু করে মুসা। এখনো পুরোপুরি সুস্থ না হলেও, ভাষা ও স্নায়ুর পুনর্বাসন চিকিৎসা চলছে নিয়মিত।
সেসময় সরকারের সহায়তায় মুসাকে সিঙ্গাপুরে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়, যেখানে প্রায় ছয় মাস থাকার পর গত এপ্রিল মাসে সে দেশে ফেরে। ফেরার পর থেকে এখন সে সিএমএইচে একাধিক চিকিৎসা ও থেরাপি নিচ্ছে।
মুসার মা বলেন, “আগে কখনো বিরক্ত হতাম, এখন শুধু চাই ও আমাকে দিনরাত ডাকুক। যতবার বলে, ততবার নতুন প্রাণ পাই।”
মায়ের কাছে সন্তানের প্রথম শব্দটাই ছিল জীবনের নতুন শুরু। সেই ডাকে শুধু আবেগই নয়, ছিল জীবনযুদ্ধে জয়ী হবার গর্বও। মা দিবসের ঠিক আগের দিন এমন একটি গল্প দেশের প্রতিটি মায়ের প্রতি এক নীরব শ্রদ্ধা।