
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট হতে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ মে মাসের শেষ সপ্তাহে ভারতের ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূল হয়ে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আঘাত হানতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। ইতোমধ্যেই ঝড়ের গতিপথ ও শক্তি পর্যবেক্ষণে রয়েছে আন্তর্জাতিক এবং জাতীয় পর্যায়ের আবহাওয়া সংস্থাগুলো।
আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ আজ রোববার তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে জানান, “২৩ থেকে ২৮ মে’র মধ্যে বঙ্গোপসাগরে একটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হতে পারে, যার নাম হতে পারে ‘শক্তি’। এই ঝড় ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের খুলনা অঞ্চল দিয়ে স্থলভাগে প্রবেশ করতে পারে।”
পলাশ বলেন, “২৪ থেকে ২৬ মে’র মধ্যে শক্তির কেন্দ্রবিন্দু স্থলভাগে আঘাত হানার সম্ভাবনা বেশি। বর্তমানে সাগরে একটি সার্কুলেশন সৃষ্টি হতে যাচ্ছে, যা ধীরে ধীরে লঘুচাপ, নিম্নচাপ হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে।”
বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশন টিম (BWOT) জানায়, ১৬ থেকে ১৮ মে’র মধ্যে বঙ্গোপসাগরে একটি সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের সূচনা হতে পারে। এখন পর্যন্ত এটি নির্দিষ্ট রূপ নেয়নি, তবে পরিবেশ পরিস্থিতি ঝুঁকিপূর্ণ ঘূর্ণিঝড়ের অনুকূলে রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ যদি বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসে, তাহলে চট্টগ্রাম, খুলনা ও বরিশাল উপকূলে ৭০ থেকে ১০০ কিমি/ঘণ্টা বেগে ঝোড়ো হাওয়া, ভারী বর্ষণ ও জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে জোয়ারের সময় বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে।
এখনো নেই চূড়ান্ত সতর্কতা:
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর এখনো ‘শক্তি’ নিয়ে কোনো চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করেনি। তবে সংস্থাটি জানিয়েছে, প্রতিনিয়ত সাগরের অবস্থান পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং পরিস্থিতির ভিত্তিতে পরবর্তী নির্দেশনা জারি করা হবে।
ঘূর্ণিঝড়টির নামকরণ করেছে শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ এশীয় সহযোগিতা বিষয়ক আবহাওয়া কমিটির নিয়ম অনুযায়ী। প্রতিটি দেশ ঘূর্ণিঝড়ের জন্য আগেভাগে কিছু নাম প্রস্তাব করে, এবং ক্রমানুসারে সেগুলোর ব্যবহার করা হয়।
প্রস্তুতি জরুরি:
উপকূলীয় অঞ্চলের প্রশাসন ও জনগণকে এখন থেকেই সচেতনতা ও প্রস্তুতির পরামর্শ দিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশ্লেষকরা। অভ্যন্তরীণ নৌযান চলাচল, লবণ ও চিংড়ি চাষ, ধান কাটার মৌসুমসহ বিভিন্ন খাতে ঝুঁকি বিবেচনায় পূর্ব প্রস্তুতির তাগিদ দেওয়া হয়েছে।