
বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে উম্মাহ্ ২৪–এর সঙ্গে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে বিশ্লেষক ও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক হাসনাত কাইয়ূম বলেছেন, "রাজনৈতিক সংস্কার এখন সময়ের দাবি হলেও, দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য এতটাই প্রকট হয়ে উঠছে যে, তা দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।"
হাসনাত কাইয়ূম মনে করেন, দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো সংস্কার নিয়ে একেক ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে, যা কেবল পরস্পরের প্রতি অবিশ্বাস বাড়াচ্ছে। তিনি বলেন, "সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, বিচারিক নিরপেক্ষতা ও প্রশাসনিক কাঠামোতে যে সংস্কারের প্রয়োজন, তা নিয়ে একটা সর্বদলীয় সংলাপ এখন অত্যন্ত জরুরি।"
তার মতে, ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচন ঘিরে যেসব সংকট দেখা দিয়েছে, তা মূলত দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সংস্কারের অভাবের ফল। “যে সংস্কার ছাড়া নির্বাচনী নিরপেক্ষতা ও সুশাসনের ভিত্তি গড়ে ওঠে না, সেখানে আজও আমরা কেবল চরম বিরোধিতা ও একে অপরকে অস্বীকার করেই এগোচ্ছি,” বলেন কাইয়ূম।
তিনি উল্লেখ করেন, "সরকার দলীয় অংশ সংস্কার শব্দটি শুনলেই আতঙ্কিত হয়ে পড়ে, আবার বিরোধী দল সংস্কার মানেই সরকার পতনের ইশারা মনে করে। এভাবে চললে কোনো ঐকমত্য আসবে না।"
সাক্ষাৎকারে কাইয়ূম দেশের তরুণ সমাজের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, "তরুণ প্রজন্ম আজ রাজনীতিতে হতাশ। তারা নেতৃত্বে নতুন চিন্তা ও পদ্ধতি চায়। রাজনৈতিক সংস্কার তাদের জন্য রাজনৈতিক পুনর্জাগরণের পথ খুলে দিতে পারে।"
তিনি আরও বলেন, "দেশজুড়ে যে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে, তার মূল সমাধান হচ্ছে খোলামেলা সংলাপ। কোনো পক্ষ যদি ভাবেন যে, শক্তি বা ক্ষমতার জোরে সংস্কার রুখে দেওয়া যাবে—তারা ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিচ্ছেন না।"
বিশেষ সাক্ষাৎকারে হাসনাত কাইয়ূম বারবার এই বার্তা দিয়েছেন—'রাজনীতি আর প্রতিহিংসার নয়, সময় এখন সহনশীলতা ও বাস্তবধর্মী সংস্কারের'। তার মতে, “রাজনীতিতে সাহস থাকা জরুরি, তবে সেটি হওয়া উচিত আত্ম-সমালোচনার সাহস।”