
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য ড. শুচিতা শরমিনের পদত্যাগ দাবিতে চলমান শিক্ষার্থী আন্দোলন নতুন মোড় নিয়েছে। টানা ২৬ দিনের ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা আগামীকাল সোমবার (১২ মে) থেকে ‘পূর্ণাঙ্গ শাটডাউন’ (Complete Shutdown) কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। এই কর্মসূচির আওতায় সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
রোববার বিকেলে শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে দেওয়া এক খোলা চিঠিতে শিক্ষার্থীরা এ ঘোষণা দেন। চিঠিতে তারা উল্লেখ করেন, “আমাদের আন্দোলনের একমাত্র লক্ষ্য—একজন অপেশাদার, মামলাবাজ ও অযোগ্য উপাচার্যকে অপসারণ। তার নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কার্যক্রম অচল হয়ে পড়েছে। ফলে, আমরা আর ধৈর্য ধরতে পারছি না।”
শিক্ষার্থীরা আরও জানান, শাটডাউন চলাকালে প্রশাসনিক ভবনে পূর্বঘোষিতভাবেই কর্মবিরতি থাকবে। তবে জরুরি সেবাগুলো যেমন সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা, পরিবহন, লাইব্রেরি এবং মেডিকেল সেবা শাটডাউনের আওতার বাইরে থাকবে।
আন্দোলনকারীরা শিক্ষকদের প্রতি শ্রেণিকক্ষে পাঠদান থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আমরা মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নৈতিক অবস্থান শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির পক্ষে থাকা উচিত। একাডেমিক বর্জন আমাদের দাবিকে জোরালো করতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।”
এর আগে আন্দোলনের অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কার্যালয় ঘেরাও, মানববন্ধন, প্রতীকী অনশনসহ একাধিক কর্মসূচি পালন করেছেন। অভিযোগ রয়েছে, উপাচার্য শুচিতা শরমিন দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছেন এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে পারেননি। শিক্ষার্থীরা তাঁর বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহার, দমনমূলক আচরণ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগও এনেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় শিক্ষার্থীদের শাটডাউন কর্মসূচি ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হতে পারে বলে জানা গেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন এবং শিক্ষার্থীদের দাবিকে ‘গুরুত্বপূর্ণ’ বলে মনে করছেন।
এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ স্বাভাবিক রাখতে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে সংযত আচরণ করার আহ্বান জানিয়েছে সচেতন মহল।