
ঢাকার গণপরিবহন ব্যবস্থায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে সরকার। আগামী ২০২৫ সালের ১ জুলাই থেকে রাজধানীতে চালু হতে যাচ্ছে ৪০০টি সম্পূর্ণ বৈদ্যুতিক বাস। নগর পরিবহনে আধুনিকতা, নিরাপত্তা এবং পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তির সংযুক্তির লক্ষ্যে নেওয়া এই প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকারের যৌথ অর্থায়নে।
এই প্রকল্পের অধীনে তিনটি আধুনিক চার্জিং ডিপো স্থাপন করা হবে, যা বৈদ্যুতিক বাসগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় চার্জিং অবকাঠামো নিশ্চিত করবে। পুরো প্রকল্পের আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে ২,৫১০ কোটি টাকা, যার মধ্যে বিশ্বব্যাংক ২,১৩৫ কোটি টাকা এবং বাংলাদেশ সরকার ৩৭৫ কোটি টাকা ব্যয় করবে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, “এই প্রকল্পের মাধ্যমে রাজধানী ঢাকাকে যানজট ও বায়ুদূষণমুক্ত, আধুনিক ও টেকসই নগর পরিবহনের দিকে নিয়ে যাওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হলো। বিশ্বব্যাংকের মতো উন্নয়ন সহযোগীদের অংশগ্রহণ প্রমাণ করে যে, আমাদের উন্নয়ন লক্ষ্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিও পাচ্ছে।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমানে ঢাকায় চালিত পুরনো ডিজেলচালিত বাসগুলো পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ যাত্রী এ ধরনের বাসে যাতায়াত করেন, যা শহরের বায়ুদূষণের অন্যতম প্রধান উৎস। বৈদ্যুতিক বাস চালু হলে একদিকে যেমন জ্বালানির খরচ কমবে, তেমনি কার্বন নিঃসরণও উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে। একইসঙ্গে যাত্রীসেবার মান বৃদ্ধি পাবে এবং গণপরিবহনে নাগরিকদের আস্থা ফিরে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সরকার এই প্রকল্পকে "Smart Bangladesh Vision 2041"-এর অংশ হিসেবে বিবেচনা করছে, যেখানে পরিবেশ, প্রযুক্তি এবং নাগরিক সেবাকে সমন্বয় করে আধুনিক শহর ব্যবস্থা গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা ধরা হয়েছে ২০৩০ সাল পর্যন্ত।
এই উদ্যোগ শুধুমাত্র পরিবেশের জন্য নয়, বরং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে মনে করছেন পরিবহন ও নগর উন্নয়ন বিশেষজ্ঞরা।